ওসমানীনগরের দৌলতপুরে একটি ব্রীজের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি
সিলেটের ওসমানীনগরের পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে একটি ব্রীজের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক শতাধিক মানুষ। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৬ মাস বিদ্যালয়ে যেতে পারে না অধিকাংশ শিক্ষার্থী। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাসে নতুন করে আশায় বুক বেধেছেন গ্রামের মানুষ।
জানা গেছে, দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ১২০টি হতদরিদ্র্য পরিবারের বসবাস। বেশীর ভাগ মানুষ কৃষি কাজ ও মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে অবহেলিত এই গ্রামের মানুষ অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। গ্রামের একদিকে বুড়ি গাং,অন্যদিকে সাদিখাল। লোকজন গ্রাম থেকে বের হতে হলে স্থানীয় বুড়ি গাং পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু সেখানে কোন ব্রীজ না থাকায় বর্ষায় নৌকা এবং গ্রীষ্মে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ দশার কারণে এলাকায় শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার হারও বেশি। বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৬ মাস বিদ্যালয়ে যেতে পারে না অধিকাংশ শিক্ষার্থী। তারপর গ্রীষ্মে যখন পানি শুকিয়ে যায় আবার বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে শুরু করে।
সম্প্রতি সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোকাব্বির খানের কাছে গ্রামবাসী ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান। সেই দাবীর প্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি এলাকা পরিদর্শন করেন। তারপর ৫০ ফুটের একটি ব্রিজের অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে ডিওলেটার প্রেরণ করেন। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ৫০ ফুটের এই ব্রিজের মেজারমেন্ট তৈরী করে একইভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
এদিকে, খালের এক পাশের সড়ক ছোট থাকায় সাদিপুর ইউনিয়নের গজিয়া গ্রামের অংশের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী তাজ উল্লাহ এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার জন্য মানবতার পরিচয় দেন। তিনি নিজ বাড়ির সীমানার প্রাচীর ভেঙ্গে ৩ ফুট পাশ ও ২৪০ ফুট লম্বা প্রায় ২ শতাংশ জায়গা দান করেন। যার ফলে ব্রিজ নির্মাণ কাজের প্রস্তুতির আরো অগ্রগতি হয়।
দৌলতপুর গ্রামের মতিলাল দত্ত বলেন, ‘এমপি মোকাব্বির খান ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি আমাদের এই গ্রামের উন্নয়নের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের প্রতিবেশী গ্রামের লন্ডন প্রবাসী হাজী তাজ উল্লাহ সাহেবও তাদের বাড়ীর দেওয়াল ভেঙ্গে আমাদের রাস্তার জন্য জায়গা দেওয়ায় আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাহেন আহমদ বলেন, ‘এখানে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে অবহেলিত এই গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। উপকৃত হবে কয়েক শত মানুষ। পাশাপাশি অন্য গ্রামের মানুষেরও সুবিধা হবে।’
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি জানান, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। ঢাকার একটি বিশেষজ্ঞ দল স্থান পরিদর্শন করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Sharing is caring!