সিলেটে হিজড়াদের নামে রানা ভূইয়া ও শাহিদা শিকদারের বাণিজ্য!
বিশেষ প্রতিনিধি
সিলেটে হিজড়া জনগোষ্ঠীর নামে এক নারী ও এক পুরুষের বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। নারী উদ্যোগ কল্যাণ সমিতির সভাপতি শাহিদা শিকদার ও রানা ভূইয়া তারা দুজন মিলে সিলেটের হিজড়াদের নামে দীর্ঘদিন থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দোকান বসিয়ে হাজার হাজার টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছেন। প্রশাসন ও সিসিকের কোন অভিযান হলেই তারা হিজড়াদের দোহাই দিয়ে বেঁচে যান। কিন্তু সম্প্রতি সিসিক মেয়র আরিফুল হক চোধুরী স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে শাহিদা শিকদারের একটি গাড়ি ভাংচুর করেন। পরে শাহিদা শিকদার রানা ভূইয়ার মাধ্যমে নাম মাত্র কয়েকটি হিজড়া নিয়ে গত ২৩ আগস্ট নগরীর রিকাবীবাজারে মেয়রের বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধন করেন।
জানা গেছে, সিলেট নগরীর কাজিরবাজার ব্রিজের উপর, সুরমা পাড়ে এবং স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে হিজড়া জনগোষ্ঠী ও নারী উদ্যোগ কল্যাণ সমিতির নাম দিয়ে প্রায় ১৪ টিরও বেশি ভ্যান গাড়ি দিয়ে দোকান বসানো হয়। কিন্তু সেই দোকানের বিষয় সিলেট হিজড়া কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সুন্দরী হিজড়া কিছুই জানেন না। অথচ কোন হিজড়াকে দোকান বসতে দেখা যানি। কাজিরবাজার ব্রিজের উপর হিজড়াদের নামে গাড়ি দিয়ে দোকনধারী করেন শেপু মিয়া নামে এক চটপটি ব্যবসায়ী এবং সুরমা পাড়ে হাবিব। বাকি দোকানগুলো শাহিদা শিকদারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শাহিদা শিকদার সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলের ভিতর ও রিকাবীবাজার এলাকাসহ সকল ব্যস্ততম এলাকায় এসকল দোকান বসিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে। তিনি কোন আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই রাস্তা মধ্যে গাড়িগুলো বসান। যদি থানা-ফাঁড়ির কোন পুলিশ সদস্য বাঁধা দেন তাহলে তিনি প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে থাকেন। সর্বশেষ রিকাবীবাজারে রাস্তায় যানযট দেখায় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তিনি নিজেই শাহিদা শিকদারকে দোকান সরানোর কথা বলেন। কিন্তু শাহিদা শিকদার উল্টে মেয়রের উপর ক্ষদ্ধ হন। পরে মেয়র গাড়িটি সরিয়ে দেন। এরপর শাহিদা শিকদার ও রানা ভূইয়া মিলে নাম মাত্র কয়েকটি ভূয়া হিজড়া নিয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। এই মানববন্ধনের পর সিলেট জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্তু জানেন না আসল রহস্য কি? মানববন্ধনে ছিলেন এরা কারা?
রানা ভূইয়া নিজেকে কখনো হিজড়া কখনো পুরুষ পরিচয় দিয়ে সমাজে চলা ফেরা করেন। গত রোববার নগরীর কাজিরবাজার ব্রিজের উপর দুইটি চটপটির গাড়ির উদ্ধোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সিকন্দর আলী ও শাহিদা শিকদার। অসলে এই দুইটি কার? এই গাড়িগুলোর মালিক চটপটি ব্যবসায়ী শেপু মিয়া। তিনি ভূয়া হিজড়া রানার ভূইয়ার শেল্টারে ব্রিজের উপর গাড়ি বসান।
সরেজমিন দেখা গেছে, চটপটি ব্যবসায়ী শেপু মিয়া নগরীর কাজিরবাজার ব্রিজের উপর থাকা প্রায় ৪০ টিরও বেশি চটপটির দোকান থেকে ৩৫০ টাকা করে চাঁদা তোলেন। এই চাঁদার টাকাগুলো লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও কদমতলী পুুলিশ ফাঁড়ির লোকজনকে দিয়ে থাকেন। যার ফলে নিরবে ব্রিজের দু’পাশে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। পুলিশ ছাড়াও বাকি টাকা রানা ভূইয়ার কাছে দিতে হয় শেপু মিয়া। তবে হিজড়া নামধারী গাড়ি গুলো থেকে কোন টাকা নেননি শেপু মিয়া। কারণ হিজড়াদের দাপট পুলিশের চেয়ে বেশি মনে করেন শেপু। বাস্তবে ব্রিজের উপর কোন হিজড়া দোকান দিতে দেখা যায়নি। আল হারামাইন ও মাহার কাছ থেকে ব্যবসার জন্য গাড়ি নিয়ে হিজড়াদের নিকট হস্তান্তর করেন সুন্দরী হিজড়া। কিন্তু কোন হিজড়া ব্যবসা করেনি। সকল গাড়ি রানা ভূইয়ার দখলে।
নারী শাহিদা সিলেটের কয়েকজন ভুয়া হিজড়াকে নিয়ে নগরী বিভিন্ন স্থানে চটপটির দোকান দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু পারিশ্রমিক হিসাবে হিজড়াদের দৈনিক একশত করে দেন। আর বাকি টাকা তার পকেটে। শাহিদা শিকদারের এসকল হিজড়াদের ব্যবসা বন্ধ করতে প্রশাসনের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন সুন্দরী হিজড়া।
সিলেট হিজড়া কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সুন্দরী হিজড়া বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্টান হিজড়াদের নামে গাড়ি দেয় ঠিকই তবে কোন হিজড়া ব্যবসা করেনি। রানা ভূইয়া তাদের কাছ থেকে গাড়ি নিয়ে ব্যবসা করে। বিনিময় গাড়ির মালিক হিজড়াদের দৈনিক ১শ টাকা করে ভাড়া দেয় রানা ভূইয়া। শাহিদা শিকদারের বিষয়ে সুন্দরী হিজড়া বলেন, সে কোন হিজড়া নয়। উনি একজন নারী সংগঠক। হিজড়াদের নামে দোকার দেওয়ার অধিকার আমি তাকে দেইনি। তিনি হিজড়াদের নাম বিক্রি করে দৈনিক হাজার হাজার টাকা আদায় করছেন। এখন তার কোন দোকানে আমার হিজড়ারা যায়নি। শাহিদা শিকদারের সংগঠনের নাম হচ্ছে নারী উদ্যোগ কল্যাণ সমিতি এখানে নারীদের নিয়ে কাজ করবে। হিজড়াদের দরকার কি? হিজড়াদের ব্যবহার করে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছে শাহিদা শিকদার।
Sharing is caring!