fbpx

Daily Sylheter Somoy

প্রকাশিত: ১:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১

হৃদয়ে বিরাজ করুক কেবল তারই ছবি

হৃদয়ে বিরাজ করুক কেবল তারই ছবি

হৃদয়ে বিরাজ করুক কেবল তারই ছবি

অনলাইন ডেস্ক
সমগ্র বিশ্বের সাদা-কালো, ধনী-গরীব সবার জন্য রহমত স্বরূপ যার আগমন তিনি হলেন আমাদের প্রিয় নবী বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)। তার আগমনের মাধ্যমে বিশ্বের জাতিসমূহ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়েছে।

কারণ পূর্বে কখনো মানব জাতির ওপর আল্লাহতায়ালার রহমত এরূপ ব্যাপক আকারে বর্ষিত হয়নি। যেভাবে মহানবী (সা.) বলেছেন ‘আমাকে সাদা কালো নির্বিশেষে সকলের জন্য পাঠানো হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ)

মহানবীর (সা.) পূর্বে আল্লাহতায়ালার সকল নবী জাতীয় নবী ছিলেন। যে জাতির নিকট তারা প্রেরিত হয়েছিলেন সে জাতির উদ্দেশ্যে ছিল তাদের শিক্ষা এবং সেই বিশেষ কালের জন্য প্রযোজ্য ছিল।

পক্ষান্তরে বিশ্বনবী (সা.) প্রেরিত হয়েছিলেন সমগ্র মানব জাতির হেদায়াত ও কল্যাণের জন্য। মানবেতিহাসে তার আবির্ভাব এক অনুপম ঘটনা। যার উদ্দেশ্য ছিল সকল পৃথক পৃথক জাতি ও বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীকে একই ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ করা, যেখানে জাতি, ধর্ম ও বর্ণজনিত সকল ভেদাভেদ বিলীন হয়ে যাবে।

যেভাবে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ রয়েছে-‘আমি তোমাকে বিশ্বজগতের জন্য কেবল এক রহমতরূপেই পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)

তাইতো উম্মতে মুহাম্মদিয়াকে সবসময় দরুদ পাঠের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেভাবে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করছেন ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা এ নবীর প্রতি রহমত বর্ষণ করছেন। হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরাও তার প্রতি দরূদ পাঠ কর এবং তার জন্য বেশি বেশি করে শান্তি কামনা কর। নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেছেন এবং তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক আযাব প্রস্তুত করে রেখেছেন।’ (সুরা আল আহযাব: ৫৫-৫৬)

মহানবী (সা.) সকল ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য যেভাবে শান্তি কামনা করেছেন, তেমনি তিনি সর্বস্তরে সেই শান্তি প্রতিষ্ঠাও করেছেন। ইসলাম এমন একটি সত্য-ধর্ম, যার প্রমান দেয়ার যেমন কোন প্রয়োজন নেই, ঠিক তেমনই বিশ্বনবীর (সা.) শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়েও কারো সন্দেহ থাকার কোনো অবকাশ নেই। তাই তো এ সত্য-ধর্ম ইসলাম এবং সত্য ও শ্রেষ্ঠ নবীর অবমাননা করাও কারো পক্ষে সম্ভব নয়। যারা এমনটি করার ধৃষ্টতা দেখাবে তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাবে।

মহানবীর আদর্শ কতইনা অনুপম ছিল যে, তিনি (সা.) বলেছেন, ‘একজন মুসলমান হলো সেই ব্যক্তি, যার হাত এবং জিহ্বা হতে অন্যেরা নিরাপদ থাকে।’ (বোখারি-মুসলিম)

বস্তুত: ইসলামী-শিক্ষা এক মুসলমানকে শান্তি-প্রিয়, বিনয়ী এবং মহৎ গুণাবলীর অধিকারী হতে উদ্বুদ্ধ করে। এই শিক্ষা ভুলে পরস্পর হানাহানির-নীতি কোনো ক্রমেই ইসলাম সমর্থন করে না। যদিও একথা অনেকেই বাস্তব ক্ষেত্রে বেমালুম ভুলে বসেছে। যদি আমার হাত ও মুখ থেকে অন্যরা নিরাপদই না থাকে তাহলে আমার কার্যে প্রমাণ করে যে আমি শান্তির ধর্ম ইসলাম এবং উম্মতে মুহাম্মদিয়ার অনুসারী নই।

হাদিসে উল্লেখ রয়েছে-মহানবী (সা.) কখনও বিধবা ও অভাবী লোকদের সাহচর্যকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখতেন না আর তাদেরকে এড়িয়েও চলতেন না। বরং তিনি তাদের অভাব মোচন করে দিতেন (মসনাদ দারেমি)।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘হজরত রাসুল করিম (সা.) কখনও কাউকেও প্রহার করেন নি- না কোনো নারীকে, না কোনো খাদেমকে, যদিও তিনি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছেন। যদি তিনি কখনও কারও দ্বারা কষ্ট পেতেন তবুও তিনি তার প্রতিশোধ নিতেন না। কিন্তু যখন আল্লাহর বর্ণিত পবিত্র স্থানসমূহকে অপবিত্র করা হত তখন তিনি আল্লাহতায়ালার জন্য এর প্রতিশোধ নিতেন’ (মুসলিম)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল করিম (সা.) গোলামদের সঙ্গে আহার করতেন এবং গম ভাঙ্গানোর সময় গোলামরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি তাদের সাহায্য করতেন। বাজার হতে জিনিসপত্র ঘরে বহন করে নিয়ে যাওয়াকে তিনি হেয় মনে করতেন না। ধনী দরিদ্রের সঙ্গে একই ভাবে মুসাফাহা (করমর্দন) করতেন। সর্বপ্রথম সালাম করতেন। তিনি কোনো নিমন্ত্রণকে অবজ্ঞা করতেন না যদিও বা সেই নিমন্ত্রণ শুধু খেজুরের হতো। তিনি দুঃখীদের পরিত্রাণ দান করতেন। তিনি কোমল হৃদয়ের অধিকারী ও দয়ালু ছিলেন। তার আচার-ব্যবহার উত্তম ছিল’ (মিশকাত)।

মহানবী (সা.)-এর পবিত্র জীবন পরমত সহিষ্ণুতা এবং ধর্মীয় ও বাক স্বাধীনতার অগণিত উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিপূর্ণ। ইসলামের (চরম) শত্রু ইকরামার ঘটনা দেখুন!

যার হত্যার নির্দেশ জারী হয়ে গিয়েছিল, তার স্ত্রী মহানবী (সা.)-এর কাছে তার জন্য ক্ষমা-প্রত্যাশী হলে তিনি (সা.) একান্ত স্নেহপরবশ হয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন। ইকরামার স্ত্রী তাকে নিয়ে মহানবী (সা.)-এর সমীপে উপস্থিত হলে ইকরামা জিজ্ঞেস করে, আপনি কি সত্যি সত্যিই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন? তিনি (সা.) বলেন, সত্যিই আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। ইকরামা জিজ্ঞেস করে, আমি যদি আমার ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকি তবুও?

অর্থাৎ আমি যদি মুসলমান না হই তবুও? এই শিরক এর অবস্থায় আপনি আমাকে ক্ষমা করছেন কি? তখন তিনি (সা.) বলেন, হ্যাঁ।

মহানবী (সা.)-এর সুমহান ব্যবহার ও অনুগ্রহের এই মু’জিযা বা নিদর্শন দেখে ইকরামা মুসলমান হয়ে যায়। (আস সিরাতুল হালবিয়্যাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ: ১০৯,)

সুবহানাল্লাহ, কতই না অনুপম আদর্শ ছিল আমাদের প্রিয় নবীর (সা.)। শ্রেষ্ঠনবীর উম্মত হিসেবে আমাদের কর্তব্য হল ইসলামের প্রকৃত-সৌন্দর্য, কোরআনের প্রকৃত শিক্ষা এবং বিশ্বনবীর (সা.) অনুপম আদর্শ সারা বিশ্বের মাঝে ফুটিয়ে তোলা আর নিজ জীবনে তা বাস্তবায়ন করা।

অশান্ত বিশ্বকে শান্ত করতে বিশ্বনবীর আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। তাই আমাদের হৃদয়ে সদা মহানবীর শিক্ষা জাগ্রত রাখতে হবে। প্রতিটি কাজকর্মে তার অতুলনীয় শিক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে।

আমরা যদি নিজ পরিবার থেকে শুরু করে সর্বত্র মহানবীর (সা.) উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে পারি তবেই পরিবার ও সমাজ তথা গোটা বিশ্ব হতে পারে শান্তির এক পরিবার। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণ করে চলার তৌফিক দান করুন, আমিন।

আমাদের লিংক :

https://www.facebook.com/somoymediasylhet

https://dailysylhetersomoy.com/

https://dailysylhetersomoy.com/english/

https://www.epaper.dailysylhetersomoy.com/home/

https://twitter.com/home

https://www.youtube.com/channel/UC-KEfv6XOsGmA4w0BEN7PHw

https://www.instagram.com/sylhetersomoy/

ডিএসএস/০৯/সেপ্টেম্বর/২০২১/রুজি

Sharing is caring!


আর্কাইভ

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>সিলেটস্থ ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কল্যাণ সমিতির দোয়া ও ইফতার মাহফিল</span> <br/> ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের উন্নয়নে আলো ছড়াচ্ছে : সাবেক মেয়র আরিফ

সিলেটস্থ ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কল্যাণ সমিতির দোয়া ও ইফতার মাহফিল
ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের উন্নয়নে আলো ছড়াচ্ছে : সাবেক মেয়র আরিফ

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, সিলেটে বসবাসরত ব্রাক্ষণবাড়িয়াবাসীর প্রাণের সংগঠন ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কল্যাণ সমিতি। এই সমিতি

সিলেট সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও গণ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

সিলেট সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও গণ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মাহনগর শাখার উদ্যাগে শুক্রবার (২৯ মার্চ) মহানগর সভাপতি মুহাম্মাদ জাকির হুসাইন’র সভাপতিত্বে ও

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সিলেট জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে</span> <br/> মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে

মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে

২৯শে মার্চ ১৯৭১ সালে সিলেটে অংশ গ্রহণকারী প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ডের আয়োজনে

জালালাবাদ থানা রিক্সা ও রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল

জালালাবাদ থানা রিক্সা ও রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে জালালাবাদ থানা রিক্সা ও রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি: চট্ট-২৭৩৭ এর উদ্যোগে “রামাদ্বানের তাৎপর্য শীর্ষক” আলোচনা

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবে নতুন সদস্য হওয়ার দরখাস্ত আহ্বান

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবে নতুন সদস্য হওয়ার দরখাস্ত আহ্বান

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুরমা

জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

জকিগঞ্জের সকল আইনজীবীদের অংশগ্রহনে জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) নগরীর অভিজাত হোটেল মেট্র ইন্টারন্যাশনালে অনুষ্ঠিত

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা সম্পন্ন

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা সম্পন্ন

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা গতকাল ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর ধোপাদিঘিরপারস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।