fbpx

Daily Sylheter Somoy

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২১

সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মনোনয়র প্রত্যাশী মোহাম্মদ আবু হোসেনের কিছু কথা

সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মনোনয়র প্রত্যাশী মোহাম্মদ আবু হোসেনের কিছু কথা

সিলেট তিন সংসদ উপনির্বাচনে সম্ভাব্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আবু হোসেনের সাথে ‘দৈনিক সিলেটের সময়ে’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার।

সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন নুরুল ইসলাম
মো. আবু হোসেন তার জীবনের শৈষব কৈশোর থেকে স্বাধীনতার জন্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মিছিলের এক সোচ্চার মুখ । ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের একজন কর্মী ও নেতা। তাছাড়া বাংলাদেশে টিচার্স এসোসিয়েশন ইউ,কে র বর্তমান সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিনের ব্রিটেনে শিক্ষকতা বিশেষ করে প্রধান শিক্ষক হিসাবে রয়েছে ন্যাশনাল কারিকুলামের অভিজ্ঞতা, ম্যানেজমেন্ট এবং লিডারশিপের কোয়ালিটি ও পারদর্শিতা অর্জন করেন।

১) আপনার জীবনের প্রাথমিক পর্যায় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে যদি কিছু আমাদের অবগত করেন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

আমি আজকের আলোচনার প্রথমেই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সদস্য বৃন্দ ও স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন শহীদ হয়েছেন তাদেরকে । মহান আল্লাহতালা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সৃষ্টিই করেছিলেন বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার করার জন্য

আমি মোঃ আবু হোসেন, জন্ম সিলেট শহরতলীর ঐতিহ্যবাহী লাউয়াই গ্রামে । আমার পিতামহ ব্রিটিশ আমলে পুলিশের হাবিলদার কটু মিয়া তারই সুযোগ্য সন্তান আলহাজ্ব আবদুর নূর এর পঞ্চম সন্তান। আমার নানা ছিলেন পেশায় একজন ডাক্তার তাছাড়া চাচা সিলেট সিভিল সার্ভিসে সাবেক কর্মকর্তা এবং আমার বাবা ছিলেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আমাদের গ্রামের প্রায় সকল বাড়িতেই ব্রিটিশ আমলে পুলিশের লোক ছিলেন। লাল পাগড়িধারী পুলিশ যাদের তৎকালীন সময়ে অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থান ছিল । ভাইদের মধ্যে দুই জনই মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন সুতরাং আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গর্বিত সন্তান।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান তখন তুঙ্গে। মিছিল-মিটিং স্লোগান এই তিনে তখন বাংলাদেশ। তখনকার রাজপথের কিছু স্লোগান এখনো মনে দাগ কাটে। আগরতলা মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলা -বাতিল করো। জেলের তালা ভাঙবো শেখ- মুজিবকে আনবো। সংগ্রাম সংগ্রাম- চলবেই চলবে। আপোষ না সংগ্রাম -সংগ্রাম সংগ্রাম। আয়ুব যদি বাঁচতে চাও গদি ছেড়ে চলে যাও। পরবর্তী সময় ইয়াহিয়া খান এর গদিতে – আগুন জ্বালো একসাথে। জয় বাংলা – জয় বাংলা। জুতা মারো তালে তালে – ইয়াহিয়া খানের গালেতে। বীর বাঙালি অস্ত্র ধর – বাংলাদেশ স্বাধীন করো। রাজবন্দী মনীষী সিংয়ের মুক্তি চাই । এই শ্লোগানগুলো সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর অন্যতম ছিল । মিছিলে মিটিংয়ে যখনি সুযুগ হয়েছে সেই ছোট্ট বয়সে স্কুলের ছাত্রকালিন সময় থেকে মিছিলে হারিয়ে যাওয়ার প্রয়াস আমার বরাবরের ই।

ছয় দফা আন্দোলন, এগারো দফা আন্দোলন গণ অভ্যুত্থান এখনও স্মৃতিতে ভাসে। রাজপথ কাপানো মিছিল স্লোগান রক্তের মধ্যে বন্যা বয়ে যেত। আমি তখন রাজা জিসি হাই স্কুলের ছাত্র। রাস্তা দিয়ে যখন মিছিল আর তালে তালে স্লোগান আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো আহ্বান জানাতো মিছিলে যোগ দিতে। হরতাল তখন লেগেই থাকতো। সেই ফাঁকে স্কুলের নাম ধরে হারিয়ে যাওয়া মিছিলে মিছিলে। শহরের অলিগলি ঘুরে সেন্ডেল পায়ে তালে তালে আওয়াজ তুলতাম ‘জয় বাংলা’। তখন কে ছাত্রলীগ কিংবা কে ইউনিয়ন সে বোধ আমার ছিল না। আমাদের সবার লক্ষ্য এক, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। কে কোন দল করে মিছিলে তা বোঝার জ্ঞান আমার ছিলনা। মনেপ্রাণে একথাই বুঝেছিলাম আমরা সবাই বাঙ্গালী আর ওরা সব শাসক পাকিস্তানি। আমরা তখন পাগলপ্রায় ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আহবানে দেশ যেন একটা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রস্তুত হচ্ছিল। সংগ্রাম সংগ্রাম চলবেই চলবে। জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনবো।

সত্তর এর উত্তাল দিন গুলোতে মিছিলে হারিয়ে যাওয়া সে যেন এক মন্ত্রমুগ্ধের মত কাজ করতো। একদিন মিছিল করতে করতে আশফাক ভাইকে মুক্তি দিলে জেলগেট থেকে শুরু করে সমস্ত শহর তাঁকে নিয়ে আমরা মিছিল করি । সত্তর সালের নভেম্বর অথবা ডিসেম্বর মাস হবে। আমরা মিছিল করতে করতে নয়াসড়কে তৎকালীন E P R হেডকোয়ার্টার খাজাঞ্চীবাড়ির সামনে অগ্নিঝরা শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠলো। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইপিআর রা তাদের ক্যাম্প থেকে মিছিলের উদ্দেশ্যে উপর দিকে গুলি ছোড়ে। একটি গুলি তখন রাস্তার ওপাশে “গুলবাগে” বিল্ডিংয়ে লাগলো। সিলেটে এই প্রথম গুলি।মিছিলে যোগদান কারী আমাদের রক্ত যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হয়ে উঠলো। আমরা স্লোগান দিতে দিতে ডিসির অফিসের সামনে আসি। তখন পাঞ্জাবি এক ADC ( খুব উঁচু ধবধবে সাদা )বাহির হয়ে এলেন, এবং ইংরেজিতে আমাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন তিনি দ্রুত এর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। শহরে গুলি হওয়ার ঘটনা , স্কুল শেষে সময় মত বাড়িতে না ফেরা, সবাই যেন ভীষণভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। দেরিতে বাড়ি ফিরায় মা বাবার তিরস্কার আর কঠোর কথা শুনতে হল।

১৯৭০ সালে ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিলেট আসেন। তিনি সিলেটের এসেই প্রথমেই আমাদের পার্শ্ববর্তী খোজারখলা গ্রামের মরহুম আবরূ মিয়া সাহেবের কবর জিয়ারত করেন। এখানে উল্লেখ্য জনাব আব্রু মিয়ার সাথে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল কলকাতা থেকে। বঙ্গবন্ধু তখন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা । বড় নেতার এমনিই গুন। সিলেট স্টেডিয়ামে বিকেলে মিটিংয়ে যাওয়ার আগে শত ব্যস্ততার মধ্যেও বন্ধুর কবর জিয়ারত করতে ভুলেন নাই।
বঙ্গবন্ধুকে সামনাসামনি দেখা এই প্রথম ১৯৭০।

আমার এক বন্ধু আলী আকবর খান এর সাইকেলে করে আমরা স্টেডিয়ামের তার বক্তব্য শুনতে যাই। বিশাল সমুদ্রের যেন হারিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতার আগে অনেক সুন্দর সুন্দর ভাটিয়ালি এবং বঙ্গবন্ধুর উপর লিখা গান গেয়ে শিল্পীরা উপস্থিত জনতাকে উদ্বুদ্ধ করে তুলল। বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বভাবসুলভ বজ্রকন্ঠ দিয়ে বক্তৃতা মঞ্চকে মাতিয়ে তোলেন। জীবনে এই দুইবার বঙ্গবন্ধুকে দেখা হল। শেষবারের মতো বঙ্গবন্ধুকে দেখতে পাই ঢাকায় ১৯৭৩ সালে।

একাত্তরের ২৬ শে মার্চ রাত্রে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী আমাদের গ্রামের সামনে বর্তমান বঙ্গবীর রোডের পাশে আমাদের দোকানের পিছনে বাঙ্কার খোড়ে অবস্থান নেয়। ( এখানে উল্লেখ্য যে, এই বঙ্গবীর রোড নামকরণ টা আমার দেয়া ) তৎকালীন সময়ে রেলগেট থেকে শুরু করে তেলি বাজারের পুল পর্যন্ত এই একটি মাত্র দোকান ছিল। ফজরের নামাজের সময় হলে আমার পিতা মরহুম আলহাজ আব্দুন নূর নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার জন্য দোকান খুলতেই পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে বন্দুক তাক করে ধরে এবং নাজেহাল করে। বাবা তখন কোনরকম আধা বাঙালিউর্দু মিলিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন যে উনি নামাজে যাচ্ছেন। উনি কাঁপতে কাঁপতে বাড়িতে এসে আমাদের সকলকে ঘুম থেকে তুলে বিস্তারিত বলেন।

সকালে গ্রামের সবাই মসজিদে জড়ো হন সবাই যেন একটা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ছিলেন। সূর্য উঠার কিছু পরেই তারা বাঙ্কার থেকে আমাদের পাশের বাড়ির আফতাব আলী নামে এক যুবককে গুলি করে আহত করে। ইতিমধ্যে আকাশে ফাইটার এর আওয়াজ ও শুরু হয়ে গেছে। আমাদের বাড়ির পেছনে সবাই মিলে খালের মধ্যে বাঙ্কার করে তার উপরে কলাগাছ দিয়ে আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত হই। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সবাই তখন বাড়ি ছেড়ে চলে যাই। পাকিস্তানের ফাইটার পাশের গ্রামের একজন লোককে মেশিনগান থেকে গুলি ছুড়ে আহত করে।

বেশ কিছুদিন গ্রামে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে থাকার পর আবার আমরা বাড়িতে চলে আসি এবং স্কুলে যাওয়া আসা শুরু করি। এসময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। সন্ধ্যার পর আমরা সবাই রেডিওর চারিদিকে বসতাম আকাশবাণীর সংবাদ শুনবো বলে । তখন এমন অবস্থা হয়েছিল মেঘের আওয়াজ শুনলে আমরা মনে করতাম এই হয়তো মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি দের উপর হামলা করে ফেলেছে।

এভাবে দিন চলে যায়। ডিসেম্বর আসে। তুমুল যুদ্ধ চলে। আবার বাড়ি ছাড়তে হলো। এবার সুজা আমরা জালালপুর আমাদের নানার বাড়িতে চলে গেলাম।
আমাদের এলাকায় তুমুল যুদ্ধ হয় ‌। প্রত্যেকটা সুপারি গাছ বাসঝাড় গুলিবিদ্ধ ছিল। গ্রামের অনেক বাড়ি পাকিস্তানী সৈন্যরা জ্বালিয়ে দেয় । আমাদের দোকানটা ও তারা পুড়িয়ে ফেলে। আমাদের গ্রামের তিনজন হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। বিশেষ করে ওসমান আলী চট্টগ্রামে রেডিও স্ক্রিপ্ট নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে হত্যা করা হয়। ওসমান আলী ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় মদনমোহন কলেজ থেকে স্ট্যান্ড করেছিলেন। এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ফাসট ক্লাস পেয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু একটি পরিবারের সমস্ত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুর চুরমার করে দেয়। বাকি সাতজন মুক্তিযোদ্ধা বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে গাজী হয়ে বাড়িতে ফেরেন।

১৬ ই ডিসেম্বরের আগেই সিলেটে হয়তো প্রথমেই জালালপুর স্বাধীন হয়েছিল। রাত্রে বড় ভাই আবু তাঈব ( তোফাজ্জল করিম) আসলেন। ওনার সাথে ছিল একটা থ্রি নট থ্রি রাইফেল এবং কিছু হ্যান্ডগ্রেনেড। উনি যখন ঘুমোচ্ছিল, তার পালঙ্কের নিচ থেকে রাইফেলটা নিয়ে আমি বাহিরে পা চারি করলে সকলের গালমন্দের কারণ হয়ে উঠি। পরদিন জাললপুর বাজারে সমস্ত মুক্তিযুদ্ধা্রা একত্রিত হলেন, সভা হল, সে কি আনন্দ মিছিল।

জীবনের প্রথম থেকে সেই কিশোর বয়স থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ তথা স্বাধীনতার মূল রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে একজন নিতান্তই কর্মী হিসাবে এখনো বেঁচে আছি। ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগ থেকে বাহির হয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র নাম ধারণ করল। আমাদের রাজা জি সি হাই স্কুলে আমরা ছাত্রলীগ এবং জাসদ দুই দল মিলে একত্রিত ভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু তার আগে আমরা বলেছিলাম এখানে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের রাজনৈতিক স্লোগান দিতে পারবে না। কিন্তু সভার চলার কিছুক্ষণ পরেই তাদের পক্ষ থেকে কেউ একজন তাদের স্লোগান দিয়ে দিল। সাথে সাথে আমরা মুজিববাদী ছাত্রলীগরা তাদের ধাওয়া করলে সেখানেই সভা পন্ড হয়ে গেল । আমরা কয়েকজন তাদের লিডার কে ধাওয়া করে লালদিঘির দিকে নিয়ে গেলাম। সেই থেকেই ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেই কাজ করি । কোন পোস্ট ধারণ করার ইচ্ছা কখনও ছিল না।

এখানে উল্লেখ্য দক্ষিণ সুরমা ছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের ঘাঁটি। বিশেষ করে এনাম ভাই ( সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা স্বামী) এর বাসা ( ভার্থখলা) ছিল ছাত্রলীগের নেতাদের আড্ডার জায়গা। রাশিদ আলী, হাজী মউলুল হোসেন , আখতার ভাই, তরিক উল্লাহ, শাহআজিজ ভাই, জিয়া উদ্দিন লালা, তোফাজ্জল কারীম ( আবু তাঈব) অহিদুল ইসলাম থোফা, রফিক ভাই, মহিদুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, মাকসুদুল ইসলাম, সাইফুল আলম, মুক্তাদির ভাই, হীরা খান প্রমূখ জাসদ ছাত্রলীগ বিভক্তি পূর্ব যেন একই বৃন্তে গাঁথা। এদের অধিকাংশই আমাদের গ্রামের।

আমার অনেক শ্রদ্ধেয় বড় ভাইরা যারা জাসদ ছাত্রলীগের যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার সেই ছোট্ট বয়স থেকে বুঝে উঠতে পারছিলাম না কেন যে তারা একটা দেশ স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথেই এরকম জ্বালাও-পোড়াও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করলেন।
তাদের এই বিদ্বেষমূলক হিংসাত্মক রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ করে দিল। ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট কাল রাত্রের ঘটনা প্রবাহ দেশের ভিতরে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি করার জন্য তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারবে না।

১৯৭৪ সালে এমসি কলেজে সাইন্সে ভর্তি হই। তখন জাসদ ছাত্রলীগের আনছার খালেদ পরিষদ। আমরা তখন ব্রেকের সময় কলেজের রুমে মিটিং করতাম। সাকু সুলতান পরিষদের পক্ষে ওই পাড়ে গিয়ে মিছিল করতাম স্লোগান দিতাম। কিছুদিন যেতে না যেতেই ৭৫ এর দুঃখজনক ও কলঙ্কময় ইতিহাস সৃষ্টি হল। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হলো। লুকিয়ে লুকিয়ে মিটিং করতে হতো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসীন হয়ে সত্যিই রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি জটিল করে তুলল। নিজের আসন পাকাপোক্ত করার জন্য রাজাকার-আলবদর দিয়ে তার মন্ত্রিপরিষদ গঠন করল।

জয় বাংলা স্লোগান এমনকি বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া তখন কঠিন হয়ে উঠলো। বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা শুরু হলো। এবং এই ধারা তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকলো। ছাত্র সংসদ ইলেকশন তখন বন্ধ ছিল।১৯৮৯ সালে ইলেকশন হলো, বন্ধু মোরশেদ তখন ভিপি নির্বাচিত হয়। আমি ছাত্রলীগের সাধারন একজন কর্মী হিসেবেই নিজেকে বেশি ভালো মনে করতাম কখনো কোন পদের জন্য লালায়িত ছিলাম না।

১৯৮০ সালে এক বছর সাউথ সুরমা হাই স্কুলে শিক্ষকতা করার পর ঢাকায় এম এ পড়ার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হই। তখন দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল মিটিং এর সাথে সাথে ঢাকার রাজপথে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়া ছিল দৈনন্দিন ব্যাপার। একুশে ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রলীগের মিছিলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং ছাত্রলীগের ফুলের তোড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্য সব রাজনৈতিক দলের পূর্বে দেয়াই ছিলো আমাদের দায়িত্ব। মুজিবী সেনাদের সেই এক অপূর্ব দৃশ্য।

ইতিমধ্যে “জালালাবাদ ছাত্র কল্যাণ সমিতি” গঠিত হয় এবং তার সাধারণ সম্পাদক পদে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয় । বন্ধুবর রেজাউল ইসলাম চৌধুরী যার সভাপতি নির্বাচিত হন। এখানে উল্লেখ্য আমরা তখন ‘জাগ্রত চেতনা’ নামে একটি ম্যাগাজিন বের করি সেখানে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর একটি সাক্ষাৎকার আমি ধারণ করি । বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সিলেটের অবদানের কথা সেখানে তুলে ধরা হয়েছে এবং তার একটা বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়।

১৯৮৫ সালে এমএ শেষ করার পর সিলেটে চলে এলে আবার আওয়ামী লীগের সাথে তত্পর হয়ে পড়ি । জিয়াউদ্দিন লালা তখন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সিলেট রেলস্টেশনের হোসেন ফার্মেসিতে হাজী মৌলুল হোসেনকে আব্বায়ক করে আমাকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ সুরমা আওয়ামী লীগের প্রথম আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু তার কিছুদিন পরই ১৯৮৫ সালে ডিসেম্বরে আমস্টারডামে একটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে ছাত্র হিসেবে চলে আসি। কিন্তু পড়ালেখা আর হয় নাই।

১৯৮৬ জানুয়ারিতে লন্ডনে চলে আসি।এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে পড়ি। প্রথমেই লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক পরে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি ও একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।

২) আপনার পেশাগত জীবন সম্বন্ধে যদি কিছু অবহিত করেন

পেশাগত জীবনে লন্ডনে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় নিয়োজিত হই দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে। এখানকার ইউনিভার্সিটি থেকে PGCE এবং QTS সম্পন্ন করি। এবং বিভিন্ন মেনস্ট্রিম স্কুলে শিক্ষকতা করি। এখানে উল্লেখ্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমাদের শিক্ষকদের একটা প্রফেশনাল অরাজনৈতিক সংগঠন “বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকে সেই ৮০র দশক থেকে পেশাজীবীদের একটি সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মূলতো একটা ইউনিয়ন হিসেবে শিক্ষকদের সহযোগিতা ছাড়া ও আমাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করা মেইনস্ট্রিম স্কুলে চাকরির সুযোগ করে দেয়া এবং আমাদের কমিউনিটিতে একটা শিক্ষা বিপ্লব সৃষ্টি করাই তার মূল উদ্দেশ্য ছিল।

স্কুলে আমাদের অবস্থান একটা রোল মডেল হিসেবে কাজ করতো। বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকের শিক্ষা ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সাকসেসফুল একটা সংগঠন। যার দরুন এখন প্রত্যেকটা বাঙালি পরিবারে দুই-চারজন গ্রেজুয়েট, চাই সে শিক্ষাক্ষেত্রে হোক, পাবলিক সার্ভিস, ব্যাংক-বীমা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সকল ক্ষেত্রে আমাদের ছেলেমেয়েদের বিচরণ।
আমি এই সংগঠনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এবং বর্তমানে সভাপতির দায়িত্বে আছি। বিলেতে কমিউনিটিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য সিলেট সদর ট্রাস্ট কর্তিক ২০১৪ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে আমাকে সম্মানসূচক পদক দান করেন। ১৯৯৯ বৃটেনের কুইন এলিজাবেথ কর্তৃক কমনওয়েলথের রাষ্ট্রের বিশিষ্ট সদস্যদের নিয়ে বাকিংহাম প্যালেসে রানীর গার্ডেন পার্টিতে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে যোগদান করার সৌভাগ্য হয়।

যদি ও আমাদের বিচরণ ব্রিটেনে কিন্তু আমরা সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বিভিন্ন দিন গুলো উদযাপন করি । সুখে-দুখে বাঙালি হিসাবে দেশের অর্জনে গৌরব বোধ করি। বাংলাদেশের সরকারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন রক্ষা করি। যেমন আমাদের বিভিন্ন সভায় বাংলাদেশ সরকারের এডুকেশন ডেলিগেটরা লন্ডনে এলে আমাদের সাথে মিটিং করেন আলোচনা করেন । শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা তাঁদের সাথে শেয়ার করি। যাহা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধন করতে সাহায্য করে।

কিছুদিন আগে বর্তমান শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে প্রায় ১০ জন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা আমাদের সাথে এক বৈঠকে বসেন এবং আমাদের অভিজ্ঞতা, শলা পরামর্শ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। আমাদের ফরেন মিনিস্টার ডক্টর মোনেম আমাদের সংগঠনের একজন সম্মানিত সদস্য এবং তিনি প্রায় সময়ই আমাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন সভায় যোগদান করে আমাদেরকে কৃতার্থ করেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মান্নান সাহেব আমাদের ডাকে সাড়া দেন।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমার শিক্ষকতা জীবনে ব্রিটিশ কারিকুলাম সম্বন্ধে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করি। ন্যাশনাল কারিকুলাম পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম শিক্ষা পদ্ধতি। গত ১২ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাকে এদেশের OFSTED বা স্কুল ইন্সপেকশন হয়। সেটা আমাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে অনেকবার। শিক্ষাক্ষেত্রে বাচ্চাদের কোয়ালিটি অফ এডুকেশন, তাদের ব্যবহার আচরণ, স্পিরিচুয়াল এবং মোরাল ডেভেলপমেন্ট, সেইফগার্ডিং চিল্ড্রেন, লিডারশিপ এবং ম্যানেজমেন্ট এই সমস্ত সকল ক্ষেত্রে আমাকে মনিটরিং করতে হয় এবং ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন এর গাইড অনুযায়ী স্কুলের সফলতা বজায় রাখাই আমার বিচরণ।

এই কথাগুলো এজন্যই বলছি শিক্ষা উন্নয়নকল্পে ব্রিটিশ কারিকুলামের উপর আমার দীর্ঘদিনের প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি যদি সুযোগ পাই দেশের স্বার্থে দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রাখতে পারি। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপারে যে অবস্থা চলতেছে সেক্ষেত্রে মাদ্রাসা এবং মূল ধারার স্কুলের পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কার্যকর এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

তাছাড়া বাঙালি কমিউনিটির শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারের জন্য থ্যামস বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি চ্যারিটেবল এডুকেশন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিবছর আমাদের অনেক ছেলেমেয়েরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সহযোগিতা পেয়ে প্রতিবছর আমাদের অনেক ছেলেমেয়ে কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ার সহজ সুযোগ হয়।

মাঝেমধ্যে পত্রপত্রিকায় লিখে থাকি।
জেনারেল এমএজি ওসমানীর সাক্ষাৎকার, UNO তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে ডঃ এম এম এর সাক্ষাৎকার। সিলেটের কৃতী সন্তান আব্দুল মতিন চৌধুরী জীবন চরিত ইত্যাদি পত্র-পত্রিকায় এবং বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বর্ণ বৈষম্য এবং যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনে এখনও এই বয়সে রাজপথে মিছিলের অংশীদার।

৩) আওয়ামী লীগ থেকে যদি আপনাকে মনোনয়ন দেয়া হয় তাহলে আপনি আপনার এলাকায় কি বাস্তবায়ন করতে চাইবেন ?

দক্ষিণ সুরমা ফেঞ্চুগঞ্জ এবং বালাগঞ্জ এই তিনটি থানা নিয়ে সিলেট ৩ অত্যন্ত বৃহত্তর একটি সংসদীয় আসন।
জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে দেশের সেবা দানের সুযোগ দান করেন তবে জাতীয় ক্ষেত্রে শিক্ষার উন্নতি সাধন ছাড়া ও
আমার লক্ষ্য থাকবে সিলেট ৩ সংসদীয় এলাকাকে একটি আদর্শ সংসদীয় এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা।

আমার প্রথম কাজ হবে প্রয়াত এমপি মরহুম মাহমুদুস সামাদ চৌধুরীর অপূর্ণ কাজগুলোকে পরিপূর্ণতা দান করা।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড ‌। এই লক্ষ্যে শিক্ষার হার ১00% উন্নীত করার জন্য করণীয় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ থাকবে আমার প্রথম লক্ষ্য।

এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে
আমার নির্বাচনী এলাকায় দক্ষিণ সুরমা কলেজ কে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা ছাড়াও প্রত্যেকটি থানায় আরও প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা।

যুব সমাজের জন্য চাকুরির ব্যবস্থা করা।
আমাদের এলাকায় একটি শিক্ষক ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা যেখান থেকে শুধু সিলেট ৩ আসন নয় সমগ্র সিলেট জেলার ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকতা ট্রেনিং নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা।

অনাবাদি জমি গুলোতে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় চাষের আওতায় নিয়ে আসতে হবে ।

আমার অন্যতম একটা করণীয় কাজ হবে, তিনটি থানার উপজেলা চেয়ারম্যানদের, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সমস্ত গ্রামের মেম্বারদের কে নিয়ে সমন্বয় সাধন করে একটি জরিপ চালানো যাতে দেখা যাবে হতদরিদ্রের সংখ্যা, অশিক্ষিত মানুষের সংখ্যা, বেকার যুবকদের সংখ্যা এবং বিধবা মহিলার সংখ্যা। এই জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে যেখানে যে সমস্ত ইনপুট দেয়ার দরকার তার ব্যবস্থা গ্রহণ হবে আমার অন্যতম লক্ষ্য।

দারিদ্রতা দূর করতে আমার আরেকটি কাজ হবে, সরকারের সাহায্য সহযোগিতার অপেক্ষা না করে প্রথমে নিজস্ব উদ্দোগে দেশে এবং এই প্রবাসে আমাদের এলাকার লোকেদের অনেক টাকা ব্যাংকে এমনিতে পড়ে আছে। আমরা তাদের কাছ থেকে সেই টাকার কিছু অংশ তিন অথবা পাঁচ বছরের জন্য ঋণ হিসেবে নিয়ে একটি মূলধন তৈরি করব। এবং এই টাকা থেকে বেকার লোকদের, দারিদ্র পরিবারের মধ্যে, বিনা সুদে লোন দিয়ে ছোট ছোট ব্যবসা বাণিজ্য সৃষ্টি করে তাদের প্রতিষ্ঠিত করা। এবং এই টাকাগুলো যাতে নির্দিষ্ট সময়ের পর আবার মূলধনে ফিরে আসে সেই ব্যবস্থা ও নিশ্চিত করব।

অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি বানানোর ফলে খাল-বিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে অচিরেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পার্লামেন্টে দাবি পেশ করা।

তিনটি থানায় মাঝারি আকারে হাসপাতাল নির্মাণ ছাড়া ও দক্ষিণ সুরমা আলমপুরে একটি পার্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জমি দখল এবং গেট ও নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে সেটা বন্ধ রয়েছে। এই পার্ক যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন লাভ করে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব।
অনতিবিলম্বে পুরনো ভাঙ্গা রাস্তাগুলোকে পাকা করে দেয়া ছাড়াও নতুন পাকা রাস্তা নির্মাণ করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাব।

৪) দেশের উন্নয়ন এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্বন্ধে আপনার মূল্যায়ন কি হবে

জাতীয় ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের মহাসড়কে যে সমস্ত মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন যেমন রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, রামপাল কোয়েল পাওয়ার প্রজেক্ট, পদমা সেতু, মাতারবারি পাওয়ার প্লান্ট, ঢাকা মেট্রো রেল , কর্ণফুলী আন্ডারওয়াটার টানেল, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেলওয়ে লিংক, ঢাকা ইলেভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস রেলওয়ে, মহেশখালী LNG টার্মিনাল, পায়রা ডিপ সি পোর্ট, হযরত শাহাজালাল এয়ারপোর্ট এক্সপানশন। এ সমস্ত কাজ গুলি করতে দেশীয় এবং বিদেশি অর্থানয়নে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট গুলো অতি শীঘ্রই সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ।

জননেত্রী শেখ হাসিনার ভীষণ বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন। ইতিমধ্যে আমরা তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছি। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা এখন অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থানে আছি। এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রুরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা আজ অবধি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তাদের কর্মক্ষেত্র বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে। এবং জঙ্গি তৎপরতা, একুশে আগস্ট এর হত্যাযজ্ঞ , সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণ, গণতন্ত্রের নামে জঙ্গি আচরণ, ওয়াজ মাহফিলের নামে জঙ্গি প্রচারণা যাহা দেশদ্রোহিতার শামিল। এ সমস্ত কর্মকাণ্ড দেশের স্বাধীনতার শত্রুরা বিদেশের সহযোগিতা নিয়ে থাকে। যার প্রমাণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুঃখজনক হত্যাকান্ড।

বিদেশে অবস্থান করে দেশ ফেরার আসামি একুশে আগস্ট এর মূল পরিকল্পনাকারী তারেক রহমান দেশে উশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে সর্বদাই তৎপর। সরকারকে অবশ্যই দেশদ্রোহীদের , খুনিদের বিচারের পর রায় কার্যকর না করা পর্যন্ত আরো দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যাবে। তাই সরকারকে অবশ্যই এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে।
দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে যাদের সংস্পর্শে ধন্য হয়েছি তাদের মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা, আব্দুস সামাদ আজাদ, দেওয়ান ফরিদ গাজী, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আবুল মাল মুহিত, হুমায়ুয়ুন রশীদ চৌধুরী, ডক্টর কে এম আব্দুল মোমেন, সৈয়দ আশরাফ, বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সুলতান শরীফ, আতাউর রহমান খান,শামসুদ্দিন খান, ডাক্তার ফয়জুল ইসলাম সহ অসংখ্য কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

পরিশেষে, আসুন আমরা সকলে মিলে দেশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখে দেশের উন্নয়নে একত্রিত হয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাই। যারা এতক্ষণ ধরে আমার কথাগুলো শুনছেন এবং যারা শুনবেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। জয় বাংলা। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক।

Sharing is caring!


সর্বশেষ সংবাদ

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবে নতুন সদস্য হওয়ার দরখাস্ত আহ্বান

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবে নতুন সদস্য হওয়ার দরখাস্ত আহ্বান

দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুরমা

জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

জকিগঞ্জের সকল আইনজীবীদের অংশগ্রহনে জকিগঞ্জ আইনজীবী পরিষদের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) নগরীর অভিজাত হোটেল মেট্র ইন্টারন্যাশনালে অনুষ্ঠিত

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা সম্পন্ন

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা সম্পন্ন

সিলেটস্থ সুনামগঞ্জ সমিতির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা গতকাল ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর ধোপাদিঘিরপারস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

মহান স্বাধীনতা দিবসে আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি সিলেটের আলোচনা সভা

মহান স্বাধীনতা দিবসে আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি সিলেটের আলোচনা সভা

আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা গতকাল সিলেট নগরীর পূর্ব শাহী

খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সাথে ইফতার করলেন পুলিশ কমিশনার ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ

খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সাথে ইফতার করলেন পুলিশ কমিশনার ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ

সিলেট জেলা স্টেডিয়াম এর মোহাম্মদ আলী জিমনেসিয়ামে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও গণমানুষের সাথে ইফতার করলেন সিলেটের পুলিশ কমিশনার মো. সিলেটের

স্মার্ট নগরী গড়তে প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাই: মেয়র আনারুজ্জামান চৌধুরী

স্মার্ট নগরী গড়তে প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাই: মেয়র আনারুজ্জামান চৌধুরী

প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) নগরীর হোয়াইট হাউস রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়। এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যক্ষ

সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ, মেঘালয়ে ২ যুবককে পিটিয়ে খুন

সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ, মেঘালয়ে ২ যুবককে পিটিয়ে খুন

সুজন চক্রবর্তী, আসাম (ভারত) প্রতিনিধি :: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে প্রতিবাদের জেরে ২ যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ। বুধবার (২৭

বীরভূমে বন্দুক নিয়ে খেলা দেখাতে গিয়ে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন!

বীরভূমে বন্দুক নিয়ে খেলা দেখাতে গিয়ে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন!

সুজন চক্রবর্তী, আসাম (ভারত) প্রতিনিধি :: মদের নেশায় বন্দুক নিয়ে খেলা দেখাতে গিয়ে চরম বিপদ। বন্ধুর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বন্ধুরই